আল কাদরি কিবরিয়া সবুজ, (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি:-
চরম খেয়ালিপনায় বসতবাড়ীর উপর দিয়ে সঞ্চালিত গাইবান্ধা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির হাইভোল্ট তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎ স্পর্শে মারাত্মক ঝলসে গিয়ে পলাশবাড়ীর অষ্টম শ্রেণীর দরিদ্র স্কুল ছাত্র আহাদ (১৩) আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা বার্ণ ইউনিটে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
আহাদের চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে দুর্দশাগ্রস্থ পরিবারটি সর্বস্তরের বিত্তবান জনমানুষের মানবিক আর্থিক সহায়তা কামনা করেছেন।
পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, পলাশবাড়ী পৌরশহরের কালুগাড়ী গ্রামের দরিদ্র মাইক্রোচালক গোলাম হোসেন ও মা হাসিনা বেগম দম্পতির একমাত্র ছেলে আহাদ।
স্থানীয় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে সখের বসে কবুতর পালন করে আসছিল।
অন্যান্য দিনের ন্যায় ঘটনারদিন গত মঙ্গলবার সকালে বসতবাড়ীর ঘরের চালার নিচে পালিত কবুতরের ঘরে আহার ও পানি সরবরাহসহ পরিচর্যা করছিল।
ঘটনার আকস্মিকতায় কিছু বুঝে উঠার আগেই আহাদ কাকতালীয় সমিতির ৩৩ হাজার ভোল্ট সঞ্চালন খোলা তারের স্পর্শে বিদ্যুতায়িত হয়।
এতে মুহুর্ত্বেই তার শরীর মারাত্মক ঝলসে সংজ্ঞা হারিয়ে মাটিতে লুটে পড়ে।
চিকিৎসার জন্য তাৎক্ষণিক তাকে পলাশবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
অবস্থার অবনতি ঘটলে উন্নত চিকিৎসার জন্য আশঙ্কাজনক অবস্থায় আহাদকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
সেখানে সে আরো মুমূর্ষু হয়ে পড়ে। গত বুধবার রাতে রংপুর থেকে তাকে ঢাকা বার্ণ ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়।
রমেক হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক সূত্র জানায় আহাদের প্রায় ৮০ শতাংশ শরীর ঝলসে গেছে।
রাখে আল্লাহ মারে কে-আর মারে আল্লাহ রাখে কে উল্লেখ করে চিকিৎসকরা জানান শারীরিক ভাবে এমন শোচনীয় পরিস্থিতির রোগীর সাধারণত বাঁচার কথা নয়।
তবে আহাদ এখনো প্রাণে বেঁচে আছে তা একমাত্র স্রষ্টার বিশেষ মহিমায়।
দু’ভাই বোনের মধ্যে আহাদ ছোট। করোনাভাইরাসের চলমান সময় অভাব পীড়িত দরিদ্র সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি আহাদের বাবা।
চরম আর্থিক দৈন্যদশার দুর্দিনে পরিবারটি এখন চোখে সরষে ফুল দেখছেন।
অসহনীয় অর্থসংকটের আবর্তে সম্পূর্ণ রিক্ত-শূন্যের প্রেক্ষাপটে পরিবারটি খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছে।
এমন দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে আহাদের ব্যয়বহুল চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহের দুশ্চিন্তায় পরিবারটি রীতিমত দিশাহারা হয়ে পড়েছেন।
প্রত্যাশিত বিদ্যুত স্পর্শের দুর্ঘটনায় পরিবারটি পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে সরাসরি দায়ী করেন।
তাদের খাম খেয়ালিপনার ধারাবাহিকতা দুর্ঘটনার মুল কারণ বলে জানা যায়।
এদিকে এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঘটনার কয়েকদিন পেরিয়ে গেলেও পরিবারটির প্রতি ন্যুনতম শান্তনাসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল কেউই সরেজমিন না আসার বিষয়টি ভূক্তভোগি অসহায় পরিবারসহ এলাকার সচেতন জনমনে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি করেছে।
গত কয়েকদিন চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে আহাদের বাবা যতসব সংকোচ ভুলে গিয়ে একমাত্র ছেলের সুস্থতা ফিরে পেতে শুভাকাঙ্খী ছাড়াও স্থানীয় চেনা-পরিচিত জনদের নিকট অর্থ সহায়তা চেয়ে হাত বাড়িয়েছেন। যতসামান্য যা পেয়েছেন তা ব্যয়সহ উপরন্ত আরো ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়ছেন।
অষ্টম শ্রেণীতে পড়ুয়া মেধাবী সন্তান আহাদের চিকিৎসা ব্যয় নিশ্চিত করতে সমাজের সর্বস্তরের স্বচ্ছল দানশীল ব্যক্তিবর্গ, জিও-এনজিও, ব্যাংক-বীমা, সংস্থা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক, বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি, অফিস-আদালতে কর্মরত কর্তাব্যক্তি, এলাকার এমপি ও মন্ত্রীসহ সর্বোপরি মাননীয় মানবিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিক হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন পরিবারটি। এমন দুঃসময়ে আহাদের চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে দেশ-বিদেশে অবস্থানরত সর্বস্তরের দয়াবান দয়ালু ব্যক্তিবর্গের নিকট নগদ অর্থ সহায়তা কামনা করা হয়েছে। সরাসরি অর্থ প্রেরণে বিকাশ নম্বর- ০১৭১৮-৩০ ৬৭১৪।